ঢাকা ১২:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাশমিকাকে জাতীয় ক্রাশ বলা প্রচারের একটি কৌশল : মনোজ বাজপেয়ী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে তারেক রহমান-ফখরুলের শোক সৌদির ওপর দিয়ে দোহায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েল, মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ গণমানুষের ভালোবাসায় সিক্ত বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী হাফেজ মোঃ মইনুদ্দিন Jubo Dal leader Liton leads Jubo Dal protest march in Patuakhali দুর্ঘটনায় আহতদের পাশে ঢাবি ছাত্রদল বিচার ব্যবস্থাকে দৌড়গোড়ায় নিয়ে যেতে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে: ডা. তাহের জামিনে বের হওয়ার ৪ মাস পর ফের গ্রেফতার ‘টুন্ডা বাবু’ শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের অভিযোগ গঠনের শুনানি সোমবার পর্যন্ত মুলতবি

১৭ বছর পর খুলছে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস, হবে হাজারো কর্মসংস্থান

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৯:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৭০ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বন্ধ থাকা কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস চত্বরে প্রাইভেট পার্টনারশিপ পলিসির (পিপিপি) মাধ্যমে নতুন শিল্প কারখানা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর ফলে ১৭ বছর পর জেলায় আবারও কর্মসংস্থানের দ্বার খুলতে যাচ্ছে। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মিল চত্বরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মিল চত্বরটি আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন (বিটিএমসি)।

টেক্সটাইল মিলস কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনয়ারিং লিজ পদ্ধতিতে ৩০ বছর মেয়াদে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস চত্বরে চারটি শিল্প কারখানা পরিচালনা করবে। এসব কারখানায় চারটি পণ্য উৎপাদন হবে। নতুন উদ্যোগে পরিচালনার ফলে এ কারখানায় স্থানীয় হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

বিটিএমসি কর্তৃপক্ষ জানায়, টেক্সটাইল মিলসটি ইজারা পদ্ধতিতে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে শুক্রবার। এর আগে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠানটি কার্যাদেশ পায়। চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি বিটিএমসির সঙ্গে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এর ফলে ১৭ বছর বন্ধ থাকা মিলসটি চালুর মাধ্যমে জেলার হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান হতে যাচ্ছে।

বিটিএমসির কর্মকর্তারা জানান, ১৯৮৬ সালে তৎকালীন সরকার এই অঞ্চলের বেকার সমস্যা দূরীকরণ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে টেক্সটাইল মিলসটি স্থাপন করেছিল। শুরুর দিকে এটি ভালোভাবে চললেও পরে সমস্যা দেখা দেয়। ২০০৭ সালে উৎপাদন জটিলতার কারণে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ফলে শত শত শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে যান। সেই থেকে জেলায় নতুন কোনও শিল্পকারখানা স্থাপনও হয়নি। কারখানাটি চালু হলে খেটে-খাওয়া মানুষের স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চুক্তি, হস্তান্তর ও উৎপাদন কার্যক্রম

উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা পদ্ধতিতে টেক্সটাইল মিলস চত্বরটি বিটিএমসির কাছে ভাড়ায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড। মাসে চার লাখ ছয় হাজার ৫১০ টাকা ভাড়ায় ৩০ বছরের জন্য নবায়নযোগ্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে যন্ত্রপাতি স্থাপন ও প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হস্তান্তরের ৩০ মাস পর থেকে বিটিএমসিকে এই ভাড়া দিতে শুরু করবে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মধ্যে তারা উৎপাদনে যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। ইজারার চুক্তি অনুযায়ী টেক্সটাইল মিলস চত্বরের ভূমি বিক্রি কিংবা ব্যাংকে জামানত দিয়ে ঋণ নিতে পারবে না প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি মিলস চত্বরে স্থপনা নির্মাণে কোনও গাছ কাটার প্রয়োজন হলে সরকারি বিধি মেনেই তা সম্পন্ন করতে হবে বলে জানিয়েছে বিটিএমসি।

হবে বহুমুখী উৎপাদন কারখানা

আগে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলসে সুতা ও তুলাজাত পণ্য উৎপাদন হলেও সেসব পণ্য আর উৎপাদন হবে না। চুক্তি অনুযায়ী ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বহুমুখী উৎপাদন পদ্ধতিতে কয়েকটি ব্যবসা পরিচালনা করবে।

বিটিএমসির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) কাজী ফিরোজ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই কারখানায় আর টেক্সটাইল কার্যক্রম হবে না। চুক্তি অনুযায়ী ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং এখানে কয়েকটি শিল্প কারখানা চালু করবে। এজন্য তারা আমাদের পুরাতন স্থাপনা ব্যবহারের পাশাপাশি নতুন স্থাপনা তৈরি করবে। তারা সরকারি বিধান ও পরিবেশ আইন মেনে এখানে নির্মাণ কার্যক্রম ও কারখানা পরিচালনা করবে।’

kurigram-2
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন (বিটিএমসি) গত শুক্রবার কারখানাটি নতুন উদ্যোক্তার কাছে হস্তান্তর করেছে

পণ্য উৎপাদন কার্যক্রম সম্পর্কে জিএম বলেন, ‘চুক্তিতে উল্লেখিত পরিকল্পনা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে তারা এখানে ভুট্টাজাত পণ্য (ভুট্টার স্টার্চ এবং তরল গ্লুকোজ), অটোব্রিক এবং অটো ব্লক, ডেইরি ও অ্যাগ্রো প্রজেক্ট (দুগ্ধজাত ও কৃষি পণ্য) এবং বহুমুখী পাটজাত পণ্য উৎপাদন- এই চারটি শিল্প কারখানা গড়ে তুলবে। কাঁচামাল প্রাপ্যতার প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই করে এসব পণ্য উৎপাদনের বিষয়টি চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে।’

‘চুক্তি অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা নজরদারি করতে মিলস চত্বরে বিটিএমসির একটি কার্যালয় থাকবে। সেখানে আমাদের নিজস্ব জনবল কাজ করবে। রাষ্ট্র ও সরকারের স্বার্থহানি হয় এমন কোনও কার্যক্রম এখানে চলার সুযোগ নেই’ বলেও উল্লেখ করেন কাজী ফিরোজ।

যা বলছেন নতুন উদ্যোক্তা

কারখানাটি নতুন উদ্যোক্তার কাছে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বশির আহমেদ বলেন, ‘রংপুর-কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের পথচলা। এজন্য আমি এখানে শিল্পকারখানা চালু করতে এসেছি। এখানে আমার কোম্পানি খুব লাভবান হবে বলে মনে করি না। কিন্তু সরকারের মতো আমারও চাওয়া এখানকার মানুষের কর্মসংস্থান। আমি এমন কিছু শিল্প এখানে করতে চাই, যাতে স্থানীয় লোকজনের কর্মসংস্থানের বিশাল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মানুষের কর্মসংস্থান, আর্থসামাজিক উন্নয়ন হওয়ার পাশাপাশি দেশের কল্যাণ হয় এমন পণ্য এখানে উৎপাদন করবো। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা কাজে হাত দেবো। আমাদেরকে আপনারা সহযোগিতা করবেন।’

যা বললেন বিটিএমসির চেয়ারম্যান

বিটিএমসির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার এস এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠান বিটিএমসির থাকবে, সরকারের থাকবে। কিন্তু কর্মসংস্থান হবে কুড়িগ্রামের মানুষের। এখানকার উন্নয়ন হবে। এই এলাকার সম্পদ ও ফসল কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটির ভাবনা থেকে এখানে আসা। এখানে কুড়িগ্রামবাসীর জন্য যে কর্মসংস্থান ছিল, সেটি ফিরিয়ে দিতে হবে। যাতে অর্থনীতির চাকা ঘোরে। এলাকার উন্নয়ন হলে দেশেরও উন্নয়ন হবে। আশা করি এবার এখানে শিল্পকারখানা চালুর মাধ্যমে এই এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিটিএমসির পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব রকিবুল বারী, জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বি.এম কুদরত এ খুদা, টেক্সটাইল মিলসের ইনচার্জ আরিফুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল মতিন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাসিবুর রহমান হাসিব ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

১৭ বছর পর খুলছে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস, হবে হাজারো কর্মসংস্থান

আপডেট সময় : ০৪:৩৯:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বন্ধ থাকা কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস চত্বরে প্রাইভেট পার্টনারশিপ পলিসির (পিপিপি) মাধ্যমে নতুন শিল্প কারখানা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর ফলে ১৭ বছর পর জেলায় আবারও কর্মসংস্থানের দ্বার খুলতে যাচ্ছে। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মিল চত্বরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মিল চত্বরটি আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন (বিটিএমসি)।

টেক্সটাইল মিলস কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনয়ারিং লিজ পদ্ধতিতে ৩০ বছর মেয়াদে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস চত্বরে চারটি শিল্প কারখানা পরিচালনা করবে। এসব কারখানায় চারটি পণ্য উৎপাদন হবে। নতুন উদ্যোগে পরিচালনার ফলে এ কারখানায় স্থানীয় হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

বিটিএমসি কর্তৃপক্ষ জানায়, টেক্সটাইল মিলসটি ইজারা পদ্ধতিতে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে শুক্রবার। এর আগে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠানটি কার্যাদেশ পায়। চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি বিটিএমসির সঙ্গে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এর ফলে ১৭ বছর বন্ধ থাকা মিলসটি চালুর মাধ্যমে জেলার হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান হতে যাচ্ছে।

বিটিএমসির কর্মকর্তারা জানান, ১৯৮৬ সালে তৎকালীন সরকার এই অঞ্চলের বেকার সমস্যা দূরীকরণ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে টেক্সটাইল মিলসটি স্থাপন করেছিল। শুরুর দিকে এটি ভালোভাবে চললেও পরে সমস্যা দেখা দেয়। ২০০৭ সালে উৎপাদন জটিলতার কারণে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ফলে শত শত শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে যান। সেই থেকে জেলায় নতুন কোনও শিল্পকারখানা স্থাপনও হয়নি। কারখানাটি চালু হলে খেটে-খাওয়া মানুষের স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চুক্তি, হস্তান্তর ও উৎপাদন কার্যক্রম

উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা পদ্ধতিতে টেক্সটাইল মিলস চত্বরটি বিটিএমসির কাছে ভাড়ায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড। মাসে চার লাখ ছয় হাজার ৫১০ টাকা ভাড়ায় ৩০ বছরের জন্য নবায়নযোগ্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে যন্ত্রপাতি স্থাপন ও প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হস্তান্তরের ৩০ মাস পর থেকে বিটিএমসিকে এই ভাড়া দিতে শুরু করবে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মধ্যে তারা উৎপাদনে যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। ইজারার চুক্তি অনুযায়ী টেক্সটাইল মিলস চত্বরের ভূমি বিক্রি কিংবা ব্যাংকে জামানত দিয়ে ঋণ নিতে পারবে না প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি মিলস চত্বরে স্থপনা নির্মাণে কোনও গাছ কাটার প্রয়োজন হলে সরকারি বিধি মেনেই তা সম্পন্ন করতে হবে বলে জানিয়েছে বিটিএমসি।

হবে বহুমুখী উৎপাদন কারখানা

আগে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলসে সুতা ও তুলাজাত পণ্য উৎপাদন হলেও সেসব পণ্য আর উৎপাদন হবে না। চুক্তি অনুযায়ী ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বহুমুখী উৎপাদন পদ্ধতিতে কয়েকটি ব্যবসা পরিচালনা করবে।

বিটিএমসির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) কাজী ফিরোজ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই কারখানায় আর টেক্সটাইল কার্যক্রম হবে না। চুক্তি অনুযায়ী ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং এখানে কয়েকটি শিল্প কারখানা চালু করবে। এজন্য তারা আমাদের পুরাতন স্থাপনা ব্যবহারের পাশাপাশি নতুন স্থাপনা তৈরি করবে। তারা সরকারি বিধান ও পরিবেশ আইন মেনে এখানে নির্মাণ কার্যক্রম ও কারখানা পরিচালনা করবে।’

kurigram-2
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন (বিটিএমসি) গত শুক্রবার কারখানাটি নতুন উদ্যোক্তার কাছে হস্তান্তর করেছে

পণ্য উৎপাদন কার্যক্রম সম্পর্কে জিএম বলেন, ‘চুক্তিতে উল্লেখিত পরিকল্পনা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে তারা এখানে ভুট্টাজাত পণ্য (ভুট্টার স্টার্চ এবং তরল গ্লুকোজ), অটোব্রিক এবং অটো ব্লক, ডেইরি ও অ্যাগ্রো প্রজেক্ট (দুগ্ধজাত ও কৃষি পণ্য) এবং বহুমুখী পাটজাত পণ্য উৎপাদন- এই চারটি শিল্প কারখানা গড়ে তুলবে। কাঁচামাল প্রাপ্যতার প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই করে এসব পণ্য উৎপাদনের বিষয়টি চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে।’

‘চুক্তি অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা নজরদারি করতে মিলস চত্বরে বিটিএমসির একটি কার্যালয় থাকবে। সেখানে আমাদের নিজস্ব জনবল কাজ করবে। রাষ্ট্র ও সরকারের স্বার্থহানি হয় এমন কোনও কার্যক্রম এখানে চলার সুযোগ নেই’ বলেও উল্লেখ করেন কাজী ফিরোজ।

যা বলছেন নতুন উদ্যোক্তা

কারখানাটি নতুন উদ্যোক্তার কাছে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বশির আহমেদ বলেন, ‘রংপুর-কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের পথচলা। এজন্য আমি এখানে শিল্পকারখানা চালু করতে এসেছি। এখানে আমার কোম্পানি খুব লাভবান হবে বলে মনে করি না। কিন্তু সরকারের মতো আমারও চাওয়া এখানকার মানুষের কর্মসংস্থান। আমি এমন কিছু শিল্প এখানে করতে চাই, যাতে স্থানীয় লোকজনের কর্মসংস্থানের বিশাল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মানুষের কর্মসংস্থান, আর্থসামাজিক উন্নয়ন হওয়ার পাশাপাশি দেশের কল্যাণ হয় এমন পণ্য এখানে উৎপাদন করবো। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা কাজে হাত দেবো। আমাদেরকে আপনারা সহযোগিতা করবেন।’

যা বললেন বিটিএমসির চেয়ারম্যান

বিটিএমসির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার এস এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠান বিটিএমসির থাকবে, সরকারের থাকবে। কিন্তু কর্মসংস্থান হবে কুড়িগ্রামের মানুষের। এখানকার উন্নয়ন হবে। এই এলাকার সম্পদ ও ফসল কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটির ভাবনা থেকে এখানে আসা। এখানে কুড়িগ্রামবাসীর জন্য যে কর্মসংস্থান ছিল, সেটি ফিরিয়ে দিতে হবে। যাতে অর্থনীতির চাকা ঘোরে। এলাকার উন্নয়ন হলে দেশেরও উন্নয়ন হবে। আশা করি এবার এখানে শিল্পকারখানা চালুর মাধ্যমে এই এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিটিএমসির পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব রকিবুল বারী, জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বি.এম কুদরত এ খুদা, টেক্সটাইল মিলসের ইনচার্জ আরিফুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল মতিন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাসিবুর রহমান হাসিব ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ প্রমুখ।