ঢাকা ১২:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাশমিকাকে জাতীয় ক্রাশ বলা প্রচারের একটি কৌশল : মনোজ বাজপেয়ী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে তারেক রহমান-ফখরুলের শোক সৌদির ওপর দিয়ে দোহায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েল, মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ গণমানুষের ভালোবাসায় সিক্ত বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী হাফেজ মোঃ মইনুদ্দিন Jubo Dal leader Liton leads Jubo Dal protest march in Patuakhali দুর্ঘটনায় আহতদের পাশে ঢাবি ছাত্রদল বিচার ব্যবস্থাকে দৌড়গোড়ায় নিয়ে যেতে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে: ডা. তাহের জামিনে বের হওয়ার ৪ মাস পর ফের গ্রেফতার ‘টুন্ডা বাবু’ শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের অভিযোগ গঠনের শুনানি সোমবার পর্যন্ত মুলতবি

চেয়ারম্যান-কমিশনার পদত্যাগ না করায় বিএসইসিতে কর্মবিরতি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৯:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫ ৮৪ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন পদত্যাগ না করায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এর আগে, বুধবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে কর্মবিরতি পালন করার ঘোষণা দেয় বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিএসইসি কার্যালয়ের ভেতরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. মাহাবুবুল আলম বলেন, ‘‘আমাদের দাবি অনুযায়ী, বুধবারের মধ্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন পদত্যাগ না করায় বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন শুরু করেছি। আমাদের এ কর্মবিরতি বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনরা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত চলবে।’’

সরেজমিনে বিএসইসির কার্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চেয়ারম্যান-কমিশনার কেউ আসেননি। তবে, বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যথাসময়ে অফিসে এসেছেন। কিন্তু, তারা কোনো কাজ করছেন না। কর্মকর্তাদের ডেস্ক ফাঁকা দেখা গেছে। এমনকি কোনো চিঠিপত্র আদান-প্রদান করা হচ্ছে না।

বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ঘোষণা অনুযায়ী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সবাই কর্মবিরতি পালন করছেন। তারা  অফিসে আলোচনা, কথাবার্তা, ঘোরাঘুরি, গল্প আড্ডায় সময় পার করছেন। এছাড়া, বুধবার লাঠিচার্জে যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা এবং শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিচ্ছেন।

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. মাহাবুবুল আলম বলেন, ‘‘বর্তমান কমিশন নিয়ে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা তৈরি আছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ— কমিশনারদের খারাপ আচরণ, বিভিন্ন কোম্পানির তদন্তের আলোকে কর্মকর্তাদের ধারাবাহিক শোকজ করা এবং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশ জারি করা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানাই। কিন্তু, তারা দাবি মেনে নেয়নি। বরং ভুল তথ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ডেকে এনে আমাদের কর্মকর্তাদের ওপর লাঠিচার্জ করিয়েছেন। এতে আমাদের ছয় কর্মী আহত হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সঙ্গে কাজ করতে পারছি না। তাই, আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদত্যাগ দাবি করছি। তারা যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে বৃহস্পতিবার থেকে পুরো কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করবেন।।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, এখানে (বিএসইসি) যোগ্য ও অভিজ্ঞ বসানো হোক। বাংলাদেশ ব্যাংকে যেমন অভিজ্ঞ অভিভাবক দেওয়া হয়েছে, আমরাও তেমন অভিভাবক চাই। যে অভিভাবক তাদের নিজেদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মান দিতে জানে না, তাদের সঙ্গে কীভাবে কাজ করা সম্ভব। আমরা তাদের দুর্ব্যবহার অনেক সহ্য করেছি, আর নয়। আমরা যদি কোনো অপরাধ করে থাকি, আর সেটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে চাকরিবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু, সেটা না করে তারা এক কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এটা সঠিক সিদ্ধান্ত নয় বলে আমরা জানিয়েছি। কিন্তু, তারা সেটা শোনেননি। বরং আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।’’

এদিকে গত রাতে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এক বার্তায় জানায়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বুধবার তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেছেন। দাবি-দাওয়ার কোনো সুরাহা না করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যৌক্তিক আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে লাঠিচার্জ ও হামলার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ কর্মস্থলে লাঠিচার্জ ও হামলার শিকার হওয়া বিএসইসি তথা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

চেয়ারম্যান-কমিশনার পদত্যাগ না করায় বিএসইসিতে কর্মবিরতি

আপডেট সময় : ০৬:৩৯:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন পদত্যাগ না করায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এর আগে, বুধবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে কর্মবিরতি পালন করার ঘোষণা দেয় বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিএসইসি কার্যালয়ের ভেতরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. মাহাবুবুল আলম বলেন, ‘‘আমাদের দাবি অনুযায়ী, বুধবারের মধ্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন পদত্যাগ না করায় বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন শুরু করেছি। আমাদের এ কর্মবিরতি বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনরা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত চলবে।’’

সরেজমিনে বিএসইসির কার্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চেয়ারম্যান-কমিশনার কেউ আসেননি। তবে, বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যথাসময়ে অফিসে এসেছেন। কিন্তু, তারা কোনো কাজ করছেন না। কর্মকর্তাদের ডেস্ক ফাঁকা দেখা গেছে। এমনকি কোনো চিঠিপত্র আদান-প্রদান করা হচ্ছে না।

বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ঘোষণা অনুযায়ী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সবাই কর্মবিরতি পালন করছেন। তারা  অফিসে আলোচনা, কথাবার্তা, ঘোরাঘুরি, গল্প আড্ডায় সময় পার করছেন। এছাড়া, বুধবার লাঠিচার্জে যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা এবং শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিচ্ছেন।

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. মাহাবুবুল আলম বলেন, ‘‘বর্তমান কমিশন নিয়ে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা তৈরি আছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ— কমিশনারদের খারাপ আচরণ, বিভিন্ন কোম্পানির তদন্তের আলোকে কর্মকর্তাদের ধারাবাহিক শোকজ করা এবং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশ জারি করা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানাই। কিন্তু, তারা দাবি মেনে নেয়নি। বরং ভুল তথ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ডেকে এনে আমাদের কর্মকর্তাদের ওপর লাঠিচার্জ করিয়েছেন। এতে আমাদের ছয় কর্মী আহত হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সঙ্গে কাজ করতে পারছি না। তাই, আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদত্যাগ দাবি করছি। তারা যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে বৃহস্পতিবার থেকে পুরো কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করবেন।।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, এখানে (বিএসইসি) যোগ্য ও অভিজ্ঞ বসানো হোক। বাংলাদেশ ব্যাংকে যেমন অভিজ্ঞ অভিভাবক দেওয়া হয়েছে, আমরাও তেমন অভিভাবক চাই। যে অভিভাবক তাদের নিজেদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মান দিতে জানে না, তাদের সঙ্গে কীভাবে কাজ করা সম্ভব। আমরা তাদের দুর্ব্যবহার অনেক সহ্য করেছি, আর নয়। আমরা যদি কোনো অপরাধ করে থাকি, আর সেটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে চাকরিবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু, সেটা না করে তারা এক কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এটা সঠিক সিদ্ধান্ত নয় বলে আমরা জানিয়েছি। কিন্তু, তারা সেটা শোনেননি। বরং আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।’’

এদিকে গত রাতে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এক বার্তায় জানায়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বুধবার তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেছেন। দাবি-দাওয়ার কোনো সুরাহা না করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যৌক্তিক আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে লাঠিচার্জ ও হামলার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ কর্মস্থলে লাঠিচার্জ ও হামলার শিকার হওয়া বিএসইসি তথা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।