ঢাকা ১২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাশমিকাকে জাতীয় ক্রাশ বলা প্রচারের একটি কৌশল : মনোজ বাজপেয়ী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে তারেক রহমান-ফখরুলের শোক সৌদির ওপর দিয়ে দোহায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েল, মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ গণমানুষের ভালোবাসায় সিক্ত বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী হাফেজ মোঃ মইনুদ্দিন Jubo Dal leader Liton leads Jubo Dal protest march in Patuakhali দুর্ঘটনায় আহতদের পাশে ঢাবি ছাত্রদল বিচার ব্যবস্থাকে দৌড়গোড়ায় নিয়ে যেতে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে: ডা. তাহের জামিনে বের হওয়ার ৪ মাস পর ফের গ্রেফতার ‘টুন্ডা বাবু’ শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের অভিযোগ গঠনের শুনানি সোমবার পর্যন্ত মুলতবি

তবে কি ব্রিটিশ এমপিদের কাছে মিথ্যাচার করলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৪৭:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫ ৫৩ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া হাজার হাজার কোটি টাকার খোঁজে তদন্ত করেছে ঢাকা। এই টাকার তদন্ত করতে গিয়ে যুক্তরাজ্যের ‘অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ’ (এপিপিজি)-এর ৪৭ জন এমপির সাথে মিথ্যাচার করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এমনটি অভিযোগ রয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান মনসুরকে নিয়ে সন্দেহজনক ই-মেইল পেয়েছেন ব্রিটিশ এমপিরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ এই কর্মকর্তা বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল সম্পদের সন্ধানে যুক্তরাজ্য সরকার ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চাইছেন। হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের ‘অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ’ (এপিপিজি)-এর ৪৭ জন এমপির একটি দল সোমবার আহসান মনসুরের সঙ্গে বৈঠকের আগে কিছু ই-মেইল পান। প্রেরক, যিনি নিজেকে সাংবাদিক বলে দাবি করেছিলেন, তিনি ইন্টারন্যাশনাল পলিসি ডাইজেস্ট নামে একটি ওয়েবসাইটের লিঙ্ক পাঠিয়েছিলেন, যেখানে মনসুরের মেয়ের সম্পদের স্পষ্ট প্রদর্শন সম্পর্কে নিবন্ধ ছিল এবং কেন তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।
মনসুর ‘অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ’ কে বলেছিলেন যে ইমেলগুলি একটি সমন্বিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার অংশ। তিনি আরও বলেন যে তার মেয়ে একজন মার্কিন নাগরিক, যার বাংলাদেশের সাথে খুব একটা সম্পর্ক ছিল না।
আসলে বাস্তবতা হচ্ছে ভিন্ন। যখন তিনি আইএমএফে কাজ করছিলেন, তখন তার মেয়ের জন্ম হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, যা অবৈধ। সরকারি চুক্তিভিত্তিক চাকুরির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান ধারণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন একাধিক সূত্র। তবে কি ব্রিটিশ এমপিদের কাছে মিথ্যাচার করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর!
এছাড়াও, তার মেয়ের বাংলাদেশের সাথে খুব একটা সম্পর্ক ছিলো না, বলে যেটা এমপিদের তিনি জানিয়েছেন, এটাও তিনি মিথ্যা বলেছেন। কারণ ২০ বছর বয়সের আগে ঢাকায় তিনি নিজেকে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী হিসেবেও দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মেহেরিন সারা মনসুরের গুলশানের হর্স অ্যান্ড হর্স রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করেছিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ওই অভিযানের পর পরই মেয়ের পক্ষে সরব হয়েছিলেন আহসান এইচ মনসুর। মেহেরিন সারা মনসুরের বাংলাদেশে রয়েছে একাধিক রেস্তোরাঁ।
ইন্টারন্যাশনাল পত্রিকা পলিসি ডাইজেস্ট এর সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে বলা হয়েছে, দুবাইয়ে গোপন সম্পদের মালিকদের যে তালিকা গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছিল, সেখানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী উদ্যোক্তার নাম বাদ দেওয়া হয়। মেহেরিন সারাহ মনসুর তাদের একজন।
পলিসি ডাইজেস্ট এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গভর্নর আহসান মনসুরের মেয়ের বিলাসী জীবন নিয়ে যে প্রতিবেদন লেখা হয়েছে, তার লেখক নাম প্রকাশে রাজি নন। তারা আরও বলেছেন, সেই লেখার বিষয়বস্তুর যে যথেষ্ট সত্যতা আছে, সে বিষয়ে তারা আত্মবিশ্বাসী।
পলিসি ডাইজেস্ট এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মেহেরিন সারাহ মনসুরের একটি নেকলেসের দাম ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যা ৬১ লাখ ৫০ হাজার। তার একটি ব্যাগের দাম ১০ হাজার মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যা ১২ লাখ ৩০ হাজার। সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছে আলিশান ফ্ল্যাট। রয়েছে দামি গাড়ি। ওয়াশিংটন ডিসিতে গ্লাস ও স্টিলের তৈরি চারতলা বাড়ি। দুবাই, লন্ডন ও যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে বিনিয়োগ।
দুবাইয়ে এমন বিলাসী জীবন যাপনকারী এই নারীর নাম মেহেরীন সারাহ মনসুর। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের মেয়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

তবে কি ব্রিটিশ এমপিদের কাছে মিথ্যাচার করলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর!

আপডেট সময় : ০১:৪৭:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া হাজার হাজার কোটি টাকার খোঁজে তদন্ত করেছে ঢাকা। এই টাকার তদন্ত করতে গিয়ে যুক্তরাজ্যের ‘অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ’ (এপিপিজি)-এর ৪৭ জন এমপির সাথে মিথ্যাচার করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এমনটি অভিযোগ রয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান মনসুরকে নিয়ে সন্দেহজনক ই-মেইল পেয়েছেন ব্রিটিশ এমপিরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ এই কর্মকর্তা বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল সম্পদের সন্ধানে যুক্তরাজ্য সরকার ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চাইছেন। হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের ‘অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ’ (এপিপিজি)-এর ৪৭ জন এমপির একটি দল সোমবার আহসান মনসুরের সঙ্গে বৈঠকের আগে কিছু ই-মেইল পান। প্রেরক, যিনি নিজেকে সাংবাদিক বলে দাবি করেছিলেন, তিনি ইন্টারন্যাশনাল পলিসি ডাইজেস্ট নামে একটি ওয়েবসাইটের লিঙ্ক পাঠিয়েছিলেন, যেখানে মনসুরের মেয়ের সম্পদের স্পষ্ট প্রদর্শন সম্পর্কে নিবন্ধ ছিল এবং কেন তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।
মনসুর ‘অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ’ কে বলেছিলেন যে ইমেলগুলি একটি সমন্বিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার অংশ। তিনি আরও বলেন যে তার মেয়ে একজন মার্কিন নাগরিক, যার বাংলাদেশের সাথে খুব একটা সম্পর্ক ছিল না।
আসলে বাস্তবতা হচ্ছে ভিন্ন। যখন তিনি আইএমএফে কাজ করছিলেন, তখন তার মেয়ের জন্ম হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, যা অবৈধ। সরকারি চুক্তিভিত্তিক চাকুরির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান ধারণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন একাধিক সূত্র। তবে কি ব্রিটিশ এমপিদের কাছে মিথ্যাচার করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর!
এছাড়াও, তার মেয়ের বাংলাদেশের সাথে খুব একটা সম্পর্ক ছিলো না, বলে যেটা এমপিদের তিনি জানিয়েছেন, এটাও তিনি মিথ্যা বলেছেন। কারণ ২০ বছর বয়সের আগে ঢাকায় তিনি নিজেকে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী হিসেবেও দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মেহেরিন সারা মনসুরের গুলশানের হর্স অ্যান্ড হর্স রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করেছিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ওই অভিযানের পর পরই মেয়ের পক্ষে সরব হয়েছিলেন আহসান এইচ মনসুর। মেহেরিন সারা মনসুরের বাংলাদেশে রয়েছে একাধিক রেস্তোরাঁ।
ইন্টারন্যাশনাল পত্রিকা পলিসি ডাইজেস্ট এর সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে বলা হয়েছে, দুবাইয়ে গোপন সম্পদের মালিকদের যে তালিকা গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছিল, সেখানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী উদ্যোক্তার নাম বাদ দেওয়া হয়। মেহেরিন সারাহ মনসুর তাদের একজন।
পলিসি ডাইজেস্ট এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গভর্নর আহসান মনসুরের মেয়ের বিলাসী জীবন নিয়ে যে প্রতিবেদন লেখা হয়েছে, তার লেখক নাম প্রকাশে রাজি নন। তারা আরও বলেছেন, সেই লেখার বিষয়বস্তুর যে যথেষ্ট সত্যতা আছে, সে বিষয়ে তারা আত্মবিশ্বাসী।
পলিসি ডাইজেস্ট এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মেহেরিন সারাহ মনসুরের একটি নেকলেসের দাম ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যা ৬১ লাখ ৫০ হাজার। তার একটি ব্যাগের দাম ১০ হাজার মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যা ১২ লাখ ৩০ হাজার। সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছে আলিশান ফ্ল্যাট। রয়েছে দামি গাড়ি। ওয়াশিংটন ডিসিতে গ্লাস ও স্টিলের তৈরি চারতলা বাড়ি। দুবাই, লন্ডন ও যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে বিনিয়োগ।
দুবাইয়ে এমন বিলাসী জীবন যাপনকারী এই নারীর নাম মেহেরীন সারাহ মনসুর। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের মেয়ে।