ঢাকা ১২:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাশমিকাকে জাতীয় ক্রাশ বলা প্রচারের একটি কৌশল : মনোজ বাজপেয়ী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে তারেক রহমান-ফখরুলের শোক সৌদির ওপর দিয়ে দোহায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েল, মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ গণমানুষের ভালোবাসায় সিক্ত বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী হাফেজ মোঃ মইনুদ্দিন Jubo Dal leader Liton leads Jubo Dal protest march in Patuakhali দুর্ঘটনায় আহতদের পাশে ঢাবি ছাত্রদল বিচার ব্যবস্থাকে দৌড়গোড়ায় নিয়ে যেতে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে: ডা. তাহের জামিনে বের হওয়ার ৪ মাস পর ফের গ্রেফতার ‘টুন্ডা বাবু’ শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের অভিযোগ গঠনের শুনানি সোমবার পর্যন্ত মুলতবি

হাত বাড়ালেই মাদক, বিপথে তরুণ সমাজ!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১৩:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ ১৭৫ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। এর ৮০ ভাগই কিশোর-তরুণ। দেশে প্রতিবছর ১৮ ধরনের মাদকের প্রবেশের বিপরীতে বিদেশে পাচার হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এমন প্রেক্ষাপটে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব মাদকবিরোধী দিবস। মাদকের বিস্তার ঠেকাতে ব্যক্তি ও সরকারি পর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি চাহিদা ও সরবরাহ ঠেকানোর তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।

অগণিত মানুষের বসবাস আর এক অদ্ভুত গতির শহর ঢাকা। আলো ঝলমলে নগরীতে আছে অন্ধকারও। অলিগলি থেকে সুরম্য অট্টালিকা-সবখানে মাদক এখন সহজলভ্য। বেসরকারি সংগঠন মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার গবেষণা বলছে, শুধু নেশার খরচ জোগাতে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে ৩০ শতাংশ মাদকাসক্ত। মা-বাবা, ভাই-বোনের মতো আপনজনকেও খুন করতে দ্বিধা করছে না তারা।

মাদক সেবনের প্রথম ধাপ ধূমপান। এর কারণে প্রতিবছর দেশে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ৬০ হাজার শিশু-কিশোর, আর ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ।

দেশে এ পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ২৭ ধরনের মাদক। এর মধ্যে ১৮ ধরনের ব্যবহার বেশি। সরকারি তথ্য বলছে, দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। যার ৮০ ভাগই কিশোর-তরুণ। প্রতিদিন গড়ে একজন মাদকের জন্য খরচ করে ১৫০ টাকা, যা বছরে দাঁড়ায় ৫৪ হাজার ৭৫০ টাকায়। এই হিসাবে বছরে দুই কোটি মাদকাসক্তের ব্যয় ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা।

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মাদকের পেছনে খরচের সিংহভাগই পাচার হচ্ছে বিদেশে। এই খাতের ব্যয়ে বিশ্বে পঞ্চম আর এশিয়াতে শীর্ষ স্থানে বাংলাদেশ।

সাধারণ মানুষ বলছেন, মাদকের ডিলারদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। প্রশাসন চাইলেই এটি সম্ভব। আর এটি করা গেলে মাদকের ব্যবহার কমে আসবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদক প্রবেশের পথগুলোতে দায়িত্বে থাকা অসাধু কর্মকর্তাদের অর্থের লোভে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার মানুষের জীবন। মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, এটি কোটি কোটি টাকার ব্যবসা। তাই অসাধুরা ঝুঁকে পড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা।

‘সর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে সেটি তাড়ানো সম্ভব নয়’ প্রবাদটি মনে করিয়ে দিয়ে তিনি আরও বলেন, এখানে সংস্কার দরকার। প্রশাসন কঠোর হলে মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

প্রতিদিনই ঢাকাসহ সারাদেশেই মাদকের চাহিদা বেড়েই চলেছে। একদিকে যেমন চাহিদা বাড়ছে, অন্যদিকে আমদানি ও সরবরাহ দুটোই বেড়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চাহিদা ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে দেশে কখনোই মাদকের প্রভাব রোধ করা সম্ভব নয়। দরকার জোরাল সমন্বিত প্রচেষ্টা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

হাত বাড়ালেই মাদক, বিপথে তরুণ সমাজ!

আপডেট সময় : ১১:১৩:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। এর ৮০ ভাগই কিশোর-তরুণ। দেশে প্রতিবছর ১৮ ধরনের মাদকের প্রবেশের বিপরীতে বিদেশে পাচার হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এমন প্রেক্ষাপটে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব মাদকবিরোধী দিবস। মাদকের বিস্তার ঠেকাতে ব্যক্তি ও সরকারি পর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি চাহিদা ও সরবরাহ ঠেকানোর তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।

অগণিত মানুষের বসবাস আর এক অদ্ভুত গতির শহর ঢাকা। আলো ঝলমলে নগরীতে আছে অন্ধকারও। অলিগলি থেকে সুরম্য অট্টালিকা-সবখানে মাদক এখন সহজলভ্য। বেসরকারি সংগঠন মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার গবেষণা বলছে, শুধু নেশার খরচ জোগাতে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে ৩০ শতাংশ মাদকাসক্ত। মা-বাবা, ভাই-বোনের মতো আপনজনকেও খুন করতে দ্বিধা করছে না তারা।

মাদক সেবনের প্রথম ধাপ ধূমপান। এর কারণে প্রতিবছর দেশে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ৬০ হাজার শিশু-কিশোর, আর ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ।

দেশে এ পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ২৭ ধরনের মাদক। এর মধ্যে ১৮ ধরনের ব্যবহার বেশি। সরকারি তথ্য বলছে, দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। যার ৮০ ভাগই কিশোর-তরুণ। প্রতিদিন গড়ে একজন মাদকের জন্য খরচ করে ১৫০ টাকা, যা বছরে দাঁড়ায় ৫৪ হাজার ৭৫০ টাকায়। এই হিসাবে বছরে দুই কোটি মাদকাসক্তের ব্যয় ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা।

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মাদকের পেছনে খরচের সিংহভাগই পাচার হচ্ছে বিদেশে। এই খাতের ব্যয়ে বিশ্বে পঞ্চম আর এশিয়াতে শীর্ষ স্থানে বাংলাদেশ।

সাধারণ মানুষ বলছেন, মাদকের ডিলারদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। প্রশাসন চাইলেই এটি সম্ভব। আর এটি করা গেলে মাদকের ব্যবহার কমে আসবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদক প্রবেশের পথগুলোতে দায়িত্বে থাকা অসাধু কর্মকর্তাদের অর্থের লোভে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার মানুষের জীবন। মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, এটি কোটি কোটি টাকার ব্যবসা। তাই অসাধুরা ঝুঁকে পড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা।

‘সর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে সেটি তাড়ানো সম্ভব নয়’ প্রবাদটি মনে করিয়ে দিয়ে তিনি আরও বলেন, এখানে সংস্কার দরকার। প্রশাসন কঠোর হলে মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

প্রতিদিনই ঢাকাসহ সারাদেশেই মাদকের চাহিদা বেড়েই চলেছে। একদিকে যেমন চাহিদা বাড়ছে, অন্যদিকে আমদানি ও সরবরাহ দুটোই বেড়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চাহিদা ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে দেশে কখনোই মাদকের প্রভাব রোধ করা সম্ভব নয়। দরকার জোরাল সমন্বিত প্রচেষ্টা।